মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৪৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
বিপ্লব ও সংহতি দিবসে স্কটল্যান্ড বিএনপির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত আজারবাইজানে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন শুরু কুলাউড়ায় ইয়াবাসহ ২ ভাই আটক নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কুলাউড়ার সাধারণ সম্পাদক রুমেল গ্রেপ্তার কুলাউড়ায় জামায়াতের নতুন আমির অধ্যাপক আব্দুল মুন্তাজিম জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে মৌলভীবাজার বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও সমাবেশ কুলাউড়ায় জালনোট প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কর্মশালা কুলাউড়ায় প্রশাসনের উদ্যোগে দখলমুক্ত ফুটপাত, মানুষের স্বস্তি  জলবায়ু সম্মেলনে আজারবাইজান যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক ফয়জুর করিম ময়ুন, সদস্য এম নাসের রহমান,এড.আবেদ রাজা

‘আজ আমার মন খারাপ’ স্ট্যাটাস দিলেও শাস্তি হতে পারে- ওয়েবিনারে বক্তারা

কেবিসি নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট : রবিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২২

‘আজ আমার মন খারাপ’- ভবিষ্যতে ফেসবুকে এমন স্ট্যাটাস দিলেও আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষমতা থাকবে সরকারি কর্তৃপক্ষের। কারণ, বাংলাদেশ ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ওটিটি প্লাটফর্মের জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন নতুন যে রেগুলেশনের (বিধিমালা) খসড়া তৈরি করেছে সেখানে এ ধরনের ব্যবস্থাই রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, নতুন এই বিধিমালায় মূল নজর দেওয়া হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জারের মতো অ্যাপে ব্যক্তিগত আলাপচারিতার তথ্যে প্রবেশ এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য। এ বিধিমালা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতই আরও একটি মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্নকারী বিধান হবে, প্রকৃতপক্ষে সাইবার অপরাধ দমন করতে পারবে না। শনিবার মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি আয়োজিত ওয়বিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

ওয়েবিনারে সূচনা বক্তব্য দেন সুরক্ষা কমিটির আহ্বায়ক বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদিন মালিক। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন বিভাগের শিক্ষক মাহফুজুল হক সুপন। মানবাধিকার কর্মী জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে আরও বক্তব্য রাখেন আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন এবং ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষক নূরাণ চৌধুরী।

ড. শাহদিন মালিক বলেন, ‘যখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছিল, তার আগেই এ আইনের কয়েকটি দিক তুলে ধরে অপপ্রয়োগের আশঙ্কা করা হয়েছিল। ওই আইনটি করার সময় বলা হয়েছিল সাইবার অপরাধ দমনের জন্য এটা করা হচ্ছে। কিন্তু আইন প্রণয়নের পর দেখা গেল- এ আইনটি সাইবার অপরাধ দমন নয়, বরং সাধারণ মানুষের মত প্রকাশের অধিকার খর্ব করার জন্যই হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আইনে যদি সবকিছু পরিষ্কার না থাকে, অনেক বেশি অস্পষ্টতা থাকে তাহলে সেটা অপব্যবহার সুযোগও সৃষ্টি হয় বেশি। এখন ডিজিটাল ও মিডিয়া ও ওটিটি প্লাটফর্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য যে বিধিমালা করা হচ্ছে সেটার ভেতরেও একই ধরনের অবস্থা দেখা যাচ্ছে। এই বিধিমালা ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষাকে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সম্ভাবত, নির্বাচনের আগে কর্তৃত্ববাদী সরকার আরও বেশি কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী এ ধরনের আইন ও বিধিমালা করে।’

মূল প্রবন্ধে মাহফুজুল হক সুপন বলেন, ‘বিটিআরসি বিধিমালার যে খসড়া দিয়েছে সেখানে টার্গেট করা হয়েছে মূলত ডিজিটাল মিডিয়া ও ওটিটি প্লাটফর্মের কনটেন্টকে। যে কনটেন্ট পছন্দ হবে সেটা রাখবে, যেটা তাদের পছন্দ হবে না, সেটা বন্ধ করে দেবে। শুধু তাই নয়, এই বিধিমালায় হোয়টাসঅ্যাপ, মেসেঞ্জারের এনস্ক্রিপটেড কোনো তথ্য যাবে না, এমন কথাও বলা হয়েছে। এর অর্থ কর্তৃপক্ষ মানুষের ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় প্রবেশাধিকার চায়। এনক্রিপশন না থাকলে কর্তৃপক্ষ যে কোনো সময় যে কারও আলাপে ঢুকে পড়তে পারবে।’

তিনি বলেন, ‘এটা সংবিধানের মৌলিক অধিকারের সরাসরি পরিপন্থী। কারণ চিঠি সংক্রান্ত আইনেও বলা আছে- কারও ব্যক্তিগত চিঠি খুলে পড়া যাবে না। সেই অনুসারে জাতিসংঘও বলছে ডিজিটাল মিডিয়ায় ব্যক্তিগত তথ্যের ও গোপনীয়তার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। অর্থাৎ, জাতিসংঘ এনক্রিপশনকে সমর্থন করেছে। কিন্তু বিটিআরসি’র এই বিধিমালায় দেশের সংবিধান, আইন ও জাতিসংঘের ঘোষণাকে অস্বীকার করে এর বিপরীতে অবস্থান নেওয়া হয়েছে। এ বিধিমালা জারি হলে তা দেশের মানুষের মত প্রকাশের অধিকারকে ভীষণভাবে ক্ষুণ্ন করবে। এমনকি কেউ যদি ফেসবুকে ‘আজ আমার মন খারাপ’-এ ধরনের স্ট্যাটাসও দেয়, তাহলে বিটিআরসি’র এই বিধিমালার আওতায় কর্তৃপক্ষ চাইলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে।’

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ | কেবিসি নিউজ ফ্রান্স
Theme Developed BY NewsFresh