রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ০৮:২৫ অপরাহ্ন

ন্যায়পরায়ণ লোকেরা ক্ষমতায় আসলে পাঁচ বছরেই দেশের চেহারা পাল্টে যাবে ডা. শফিক

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : রবিবার, ৮ জুন, ২০২৫

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ন্যায়পরায়ণ লোকেরা ক্ষমতায় আসলে পাঁচ বছরেই দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। বিগত ১৫ বছরে দেশে রাজতন্ত্র চলেছে, অথচ বাংলাদেশ কোনো রাজতন্ত্রের দেশ নয়। আল্লাহ যেন এ দেশকে এমন নেতৃত্বের হাতে তুলে দেন, যিনি ন্যায়ের অবিচল থাকবেন।

রোববার (৮ জুন) দুপুরে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভা মিলনায়তনে পেশাজীবী প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রবাসীদের কল্যানে কাজ করেছে জামায়াতে ইসলামী উল্লেখ করে তিনি বলেন, উচ্চমূল্য বিমান ভাড়া কমিয়ে আনতে পর্দার আড়াল থেকে কাজ করেছে জামায়াতে ইসলামী । কারণ সামনে গেলে দুশমন রা দাঁড়িয়ে যাবে । সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে থেকে দুর্নীতির আর সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে সত্যিকারে পদক্ষেপ নিলে এই বাংলাদেশ একটি কল্যাণকর রাষ্ট্রে পরিণত হবে।

জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, কেউ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করবেন না। শহীদদের রক্তের সাথে কেউ বেইমানী করবেন না। শহীদদের রক্তের অমর্যাদা হয় এমন কোনো নির্বাচন আমরা দেখতে চাই না। শহীদদের রক্তের মর্যাদা রাখতে একটি সুন্দর, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অবশ্যই হতে হবে। নির্বাচনে বাইরের দেশের হস্তক্ষেপ বাংলাদেশের জনগণের কাম্য নয়। আমরাও অন্য দেশের কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। আমরা সবাইকে বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা একটা প্রতিহিংসা মুক্ত সমাজ দেখতে চাই। আমি এই উপজেলার সন্তান; আমার বিরুদ্ধেও যুদ্ধাপরাধের মামলা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তখন আমার সেই বয়সও ছিলো না। আমি সেই অর্থে কোনো সংগঠনের সাথে মোটেই যুক্ত ছিলাম না। জামায়াতে ইসলামীর আমীর হওয়ায় ওরা আমাকে যুদ্ধাপরাধী বানানোর চেষ্টা করেছিল। একবার দুবার নয়, অনেকবার বৃথা চেষ্টা করেছে। কিন্তু কুলাউড়ার একটা মানুষও তাদের কথায় সায় দেয়নি। আমি এই ঝণ আজীবন শোধ করতে পারবো না। আমি কুলাউড়াবাসীর কাছে চির কৃতজ্ঞ। কারা আমাকে যুদ্ধাপরাধী বানাতে চেয়েছিল- সব জানি। কিন্তু প্রতিশোধ নেব না। প্রতিহিংসা আর প্রতিশোধ যদি নিতেই থাকি, তাহলে সমাজ একটা অসুরের সমাজে পরিণত হবে। একটা মানবিক সমাজ আর বানাতে পারবো না। তবে যারা অপরাধ করেছে তাদের ন্যায় বিচার হতেই হবে; এই দাবি আমাদের বলিষ্ঠ। এখানে কোনো ছাড় দেবো না।

আমীরে জামায়াত আরও বলেন,  দেশের বিদ্যমান সম্পদই বাংলাদেশকে বদলানোর জন্য যথেষ্ট। আমাদের কুশিক্ষার জায়গায় সুশিক্ষা ফিরিয়ে আনতে হবে। আকাশ অপসংস্কৃতির কারণে আমাদের পরিবারের কাঠামো প্রায় এলোমেলো হয়ে গেছে। দেশের শিক্ষা কারিকুলাম ও মডিউল যদি নৈতিকতার ভিত্তিতে তৈরি হয়, তাহলে শিক্ষা পূর্ণতা পাবে। ভিক্ষুক থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ধনী ব্যক্তি পর্যন্ত সবাই ট্যাক্স দেয়। সেই ট্যাক্সের টাকা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানা উন্নয়নমূলক কাজে সরকার ব্যয় করে। তাদের দান-অনুদানে উচ্চ শিক্ষিত হয়ে আজ আমরা যারা এই জায়গায় এসেছি- আমরা সকলেই জাতির কাছে দায়বদ্ধ। সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি ইট, বালি, পাথরের সাথে এদেশের আঠারো কোটি মানুষের ঘাম জড়িত। এটা যদি শিক্ষিতদের মগজে প্রতিষ্ঠা করা যেতো, তাহলে ঘুষ নেওয়ার সময় তাদের হাত-পা থর থর করে কাঁপতো। এই নৈতিক দায়বদ্ধতা যদি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় যুক্ত করতে পারি তাহলে আমাদের শিক্ষিত সমাজ জাতির সম্পদে পরিণত হবে।

বিভিন্ন পেশার বিপুল সংখ্যক  পেশাজীবি প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে মতবিনিময় সভায়  বক্তব্য রাখেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগর আমির ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মো. ফখরুল ইসলাম, জেলা নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রহমান, জেলা সেক্রেটারি মো. ইয়ামির আলী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জেলার সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, ঢাকা পল্টন থানা আমীর শাহীন আহমদ খান, জেলা সহকারী সেক্রেটারি আজিজ আহমদ কিবরিয়া, পৌর আমীর হাফেজ তাজুল ইসলাম। পেশাজীবী নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এডভোকেট ছালিক আহমদ চৌধুরী, আনিসুর রহমান, মনির উদ্দিন চৌধুরী, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মোহাম্মদ মাসুক উদ্দিন, মোঃ শফিক উদ্দিন, মোহাম্মদ শামসুল হক, এড. রবিউল ইসলাম, এনামুল ইসলাম, রাজানুর রহিম ইফতেখার, জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন, উপজেলা সভাপতি আতিকুর রহমান তারেক প্রমুখ।

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ | কেবিসি নিউজ ফ্রান্স
Theme Developed BY NewsFresh