মহি উদ্দিন রিপন : মৌলভীবাজারে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেলে মৌলভীবাজার শহরের একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের জেলা দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের সেক্রেটারি জেনারেল মো. তাজিরুল ইসলাম তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন,
আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম কী হালুয়া-রুটি খাওয়ার জন্য? এটাই কী আমাদের স্বপ্ন ছিল?- এই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে তিনি আরো বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের পর থেকেই দেশে বৈষম্য চলেছে। আজ ৫৪ বছর পরেও আমরা বৈষম্যহীন সমাজ পাইনি।
তিনি বলেন, বিগত ১৫-১৬ বছরে ফ্যাসিস্ট সরকারের শাসনামলে দেশে মেগা দুর্নীতি হয়েছে, হয়েছে ডিজিটাল চুরি। আয়নাঘরে নির্যাতন, গুম-খুন, হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের ঘটনা ঘটেছে। জুলাই মাসে ২০০০ মানুষ হত্যার দায়ে তাদের বিচার হতে হবে।
দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা চাই সৎ মানুষের শাসন। আমাদের দুজন মন্ত্রী ছিলেন, তাদের মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতির ছিটেফোঁটাও ছিল না। এই ধরনের নেতৃত্বই আমাদের কাম্য।
শেখ মুজিবুর রহমানের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, শেখ মুজিব পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে মাত্র ১০ মিনিটে গণতন্ত্র হত্যা করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেন। সেই স্বৈরতন্ত্রের ধারাবাহিকতায় তিনি জীবন থেকে বিদায় নেন।
তিনি আরও বলেন, শেখ মুজিবের কন্যা শেখ হাসিনা এসে ১৬ বছর শাসন করে দিনের ভোট রাতে দিয়ে, গুম-খুন, চাঁদাবাজি ও অর্থপাচারের রাজত্ব চালিয়েছেন। দলীয় লোকদের নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অর্জনকে কলঙ্কিত করেছেন।
জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. ইয়ামীর আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা ও জেলা জামায়াত আমির প্রকৌশলী মো. শাহেদ আলী।
সম্মেলনে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা তাদের জীবনের স্মৃতিচারণ, দুঃখ-কষ্ট ও বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরেন এবং জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের নেতৃত্বে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
পরে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মনোয়ার আহমদ চৌধুরীকে সভাপতি ও মো. ফারুক উদ্দিনকে সেক্রেটারি করে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটি গঠন করা হয়।