কুলাউড়া উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কমিটি গঠনে পুনরায় তপশীল ঘোষনা করে নির্বাচন দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি’র নেতাকর্মীদের আয়োজনে শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকেল পাঁচটায় কাদিপুর ইউনিয়নের পেকুরবাজারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিলও দেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও কাদিপুর ইউনিয়ন যুবদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আতাউর রহমান সেন্টু, ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি, সাবেক ছাত্রদল নেতা সাহেব আলী জিলু, সাবেক সভাপতি ইসরাইল আলী ছুটই, বিএনপি নেতা আব্দুল মজিদ আব্দাল। এরআগে গত ৫ জুন ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির পুনরায় নির্বাচনী তপশীল ঘোষনার জন্য জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি ও উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন বিএনপির নেতৃবৃন্দরা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কাদিপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সদ্য ঘোষিত বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি নিয়ে নানা অনিয়ম, স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। দলীয় গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় কাউন্সিল না দিয়ে ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়কসহ বিএনপি’র কিছু নেতৃবৃন্দদের সাথে যোগসাজশ করে পছন্দের লোকেদের নিয়ে কমিটি গঠন করার পায়তারা চলছে। ইতিমধ্যে সভাপতি হিসেবে এলাইচ মিয়ার নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদ ঘোষনা নিয়ে চলছে নানা পায়তারা। এতে ক্ষিপ্ত হন ওয়ার্ডের প্রতিদ্বন্ধি অন্য প্রার্থীরা। দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে একপেশী কমিটি ঘোষণা করা হলে দলীয় ঐক্যে ভাঙন দেখা দিতে পারে।
বক্তারা আরো বলেন, গত ২৪ মে কাদিপুর ইউনিয়নে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল হওয়ার কথা ছিল। সেই অনুযায়ী ২০ মে সন্ধ্যার পরে প্রার্থীদের মনোনয়ন গ্রহণ করা হয় এবং মনোনয়ন গ্রহণের শেষ সময় ছিল ২১ মে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। ২১ তারিখ রাতে আমাদের প্রতিদ্বনিন্ধ প্রার্থীদের কাছ থেকে মনোনয়ন ফি ও আইডি কার্ড নেয়া হয়। কিন্তু ২৪ মে বিকেলে আমরা লোকমুখে শুনতে পাই নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা বিএনপি’র কর্মীরা কি কারণে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছি সেটা জানতে চাই বিএনপি নেতাদের কাছে। আমরা এই ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য বিগত সময়ে ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বহু আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষেী মহলের কারণে আমরা আজ ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত। তৃণমূলের আস্থা ও নেতৃত্ব ফিরিয়ে আনতে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নতুন করে ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা দরকার। মাঠ পর্যায়ে যেসব নেতাকর্মী বিগত দিনে আওয়ামীলীগের সাথে সখ্যতা রেখে বহাল তবিয়তে ছিল তাদেরকেই এখন দলীয় পদ-পদবির জন্য ইউনিয়ন আহবায়ক কমিটি গোপন সমঝোতা ও আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে একটি পাতানো নির্বাচন করার জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তাই উপজেলা ও জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দদের কাছে আমাদের দাবি, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে গ্রহণযোগ্য কাউন্সিল হওয়া উচিত। দ্রুত কাদিপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে পুনরায় নির্বাচনী তপশীল ঘোষণা ও নতুন করে কাউন্সিল করতে যেন প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়।
এ বিষয়ে কাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন বলেন, অর্থের বিনিময়ে কমিটি গঠনের অভিযোগ সঠিক নয়। আমি সততা ও নিষ্ঠার সাথে তিনবার কাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র আহবায়কের দায়িত্ব পালন করে আসছি। বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে উপজেলা বিএনপি’র নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্তমতে সভাপতি প্রার্থী ইসরাইল হোসেন ছুটই’র প্রার্থীতা বাতিল করে এলাইচ মিয়াকে এককভাবে সভাপতি হিসেবে ঘোষনা করা হয়। আর আগামী বাকি দুই পদের কাউন্সিল হবে আর যদি তাদের মধ্যে সমঝোতা হয় তাহলে সেখানে সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হবে।
উপজেলা বিএনপির আহবায়ক রেদওয়ান খান বলেন, দলীয় গঠনতন্ত্র মোতাবেক আমরা প্রতিটি ইউনিয়নে ও প্রতিটি ওয়ার্ডে বিএনপির কাউন্সিল সম্পন্ন করছি। কাদিপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিষয়ে যে অভিযোগটি উঠেছে তা সঠিক নয়। নির্ধারিত সময়ের ভিতরে যারা মনোনয়ন ক্রয় করতে পারেনি তারা পরবর্তীতে এসে মনোনয়ন ক্রয় করতে চেয়েছিল। এটাতো নিয়মের মধ্যে পড়েনা। নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরে আমাদের কাছে প্রার্থীতা বাতিল হওয়া একজন প্রার্থী আবেদন করেছেন। এরপর আমরা একটি কমিশন করে তদন্ত করিয়েছি।