মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় পানীয় জুসের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে মা-মেয়েকে অচেতন করে প্রাণে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বাদী হয়ে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে কুলাউড়া থানায় সম্প্রতি লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী নাসিমা বেগমের ভাই সাচ্চু মিয়া। অভিযোগের পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নের লংলা খাস (নতুন বস্তি) এলাকার বাসিন্দা মৃত আক্তার আহমেদের স্ত্রী নাসিমা বেগম (৫০) তার মেয়ে শারমিন আক্তার (১৮) কে গত ১৫ জুলাই বিকেলে আনুমানিক ৪টায় একই এলাকার বাসিন্দা মৃত রাশিদ আলীর ছেলে মোঃ আলেখ মিয়া (৪৫) ও আলেখ মিয়ার স্ত্রী হেনা বেগম (৩৮) বসতঘরে প্রবেশ করে প্রচন্ড গরমের অজুহাতে তাদের পানীয় জুসের বোতল এগিয়ে দেয়। আলেখ মিয়ার কথায় বিশ্বাস করে নাসিমা বেগম বোতলটি হাতে নিয়ে সামান্য জুস পান করে এবং তার মেয়ে শারমিন আক্তারও পান করেন। এরপর নাসিমা ও তার মেয়ে শারমিনের গলা ও বুকে প্রচন্ড জ¦ালপোড়া শুরু হলে তারা ছটফট করে অচেতন হয়ে পড়েন। এসময় বিবাদী আলেখ মিয়া তার স্ত্রীকে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে নাসিমা ও তার মেয়ে শারমিনের শারীরিক অবস্থা গুরুতর ও আশংকাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত ডাক্তার গত ১৭ জুলাই মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার্ড করলে সেখানে তাদের ভর্তি করা হয়। ১৯ জুলাই হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে আসার পর আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে আবারও তাদের কুলাউড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে চিকিৎসা শেষে তারা বাড়িতে আছেন।
ভুক্তভোগী নাসিমা বেগমের ভাই সাচ্চু মিয়া বলেন, বর্তমানে আমার বোন ও ভাগ্নি মোটামুটি সুস্থ আছে। তাদের চিকিৎসায় প্রায় ৩০ হাজার টাকারও বেশি খরচ হয়েছে। স্থানীয় এলাকায় বিষয়টি সমাধানের জন্য আলোচনা করলেও তারা সেটি সমাধান না করতে পারায় আমরা থানায় অভিযোগ দিয়েছি।
তদন্তকারী কর্মকর্তা কুলাউড়া থানার এসআই ফরহাদ মাতব্বর বলেন, সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। পুলিশের খবর পেয়ে অভিযুক্তরা বাড়ি তালাবদ্ধ করে পালিয়ে গেছে। স্থানীয়ভাবে এলাকার লোকজন বলেছেন, তারা বৈঠকের মাধ্যমে সেটি সমাধান করবেন। সমাধান না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওমর ফারুক বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। #