মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় টানা ৪০ দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করায় ৬০ শিশু কিশোরকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। এমন ব্যতিক্রমী কর্মসূচির আয়োজন করে উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের মনসুর ইসলামীক সোসাইটি ।নিয়মিত নামাজ আদায়কারী ৬০ শিশু কিশোরের মধ্যে ২ জনকে বাইসাইকেল, ৩ জনকে টেবিল ফ্যান ও ৫ জনকে টেবিলসহ বাকিদের বিভিন্ন উপহারসামগ্রী দেওয়া হয়।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে মনসুর মোহাম্মদিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা মাঠে ওই কিশোরদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয় সোসাইটির নেতৃবৃন্দ ও অতিথিরা।
এ সময় শিশু-কিশোরদের মুঠোফোন আসক্তি কমিয়ে নামাজে আগ্রহী ও মসজিদমুখী করতে এই কর্মসূচি নেওয়া হয় বলে জানান আয়োজকরা।
অনুষ্ঠানে ওয়ারিয়র্স অফ জুলাই মৌলভীবাজারের জেলা সদস্য সচিব জাহিদ আল ফেরদৌস এর সঞ্চালনায় ও সোসাইটির পরিচালক সোহেল আহমদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও প:প: কর্মকর্তা ডা: মো.জাকির হোসেন, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মুহিত বাবলু, কাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো: মোক্তার, জামায়াতের ইউনিয়ন সভাপতি আব্দুল করিম, হোসেনপুর জামে মসজিদের খতিব মাওলানা দেলোয়ার হোসেন, খতিব মাওলানা তরিকুল ইসলাম খান, মনসুর মোহাম্মদিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সহ সভাপতি মো.সাইফুর রহমান, সাংবাদিক মহি উদ্দিন রিপন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি নাহিদুর রহমান প্রমুখ।
আয়োজক কমিটির সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম জানান, চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ৪০ দিন নামাজ আদায়ের কর্মসূচি নেওয়া হয়। কর্মসূচিতে ৬০ জন শিশু কিশোর অংশ নেয়। প্রত্যেকেই টানা ৪০ দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে এসে আদায় করতে সক্ষম হয়েছে। তাদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে প্রথম, দ্বিতীয় দুইজনকে বাইসাইকেল এবং বাকিদের অন্যান্য পুরস্কার দেওয়া হয়।
আয়োজক কমিটির সদস্য জুবায়ের মাহমুদ উজ্জ্বল জানান , পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়কারীকে আল্লাহ পুরস্কৃত করবেন। আমরা শিশু-কিশোরদের নামাজে আগ্রহী করতে এ উদ্যোগ নিয়েছি।
বাইসাইকেল পুরস্কার পাওয়া কিশোর রাকিব বলেন, টানা ৪০ দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করায় এখন মসজিদে এসে নামাজ পড়ার অভ্যাস হয়ে গেছে । শুধু পুরস্কার পাওয়ার আশায় নয়, মুসলমান হিসেবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হবে। জীবনের বাকি সময় যেন জামাতে নামাজ পড়তে পারি, সে জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।
প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের প্রশংসা করি। নামাজ খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে সহায়তা করে। আমাদের সমাজে আজকে ভালো মানুষের বড় অভাব। ভালো মানুষের অভাবের কারণে আমাদের দেশ আরো আগাতে পারেনি। এর অনেক কারণ রয়েছে তারমধ্যে ধর্মীয় বা সামাজিক কারনও হতে পারে। আমি মনে করি নিঃসন্দেহে নামাজ প্রতিযোগিতায় সমাজে ভালো মানুষ তৈরি করবে। প্রত্যেক জায়গায় যদি ভালো মানুষ দুই চারজন থাকে আশাকরি এ দেশ আরো এগিয়ে যাবে।