তথ্য প্রযুক্তিতে পৃথিবী এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। তবে ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা বাংলাদেশে পিছিয়ে রয়েছে। এখন পর্যন্ত দেশের ব্যাংকিং অবকাঠামোর সাথে গুগল ওয়ালেটের সমন্বয় না থাকায় বাংলাদেশে এই সেবা চালু করা সম্ভব হয়নি।

প্রযুক্তিপ্রেমী শহুরে ব্যবহারকারীদের মধ্যে এনএফসি পেমেন্টের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এই উদ্যোগ দেশের আর্থিক লেনদেনের খাতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।

বহু প্রতীক্ষার পর, বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হতে যাচ্ছে গুগলের ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা গুগল ওয়ালেট—যা ‘গুগল পে’ নামেই বেশি পরিচিত। গুগল পে ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ এশিয়ার বাইরেও সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং মালয়েশিয়ার মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতেও ব্যবহার হচ্ছে।

মানুষের হাতে থাকা স্মার্টফোনই হয়ে উঠবে গ্রাহকদের ‘ডিজিটাল ওয়ালেট’। ফলে আর আলাদা করে প্লাস্টিক কার্ড বহন করার দরকার পড়বে না। আকাশপথে যাতায়াত থেকে শুরু করে কেনাকাটা কিংবা সিনেমা, সবকিছুতেই মোবাইল ফোনেই হবে লেনদেন।

আগামী এক মাসের মধ্যেই দেশের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থায় এ সেবার কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।

বুধবার (২৮ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানান স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা।

তিনি জানান, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর, বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা ‘গুগল পে’ (Google Pay) আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে চালু হতে যাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, আগামী এক মাসের মধ্যেই এই সেবা দেশের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থায় তাদের কার্যক্রম শুরু করবে। এই সেবা চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশের স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা তাদের হাতে থাকা ডিভাইসকেই একটি পূর্ণাঙ্গ ‘ডিজিটাল ওয়ালেট’ হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। এর ফলে আলাদা করে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড বহন করার প্রয়োজনীয়তা অনেকাংশে কমে যাবে।

প্রাথমিক পর্যায়ে সিটি ব্যাংকের গ্রাহকরা তাদের ভিসা ও মাস্টারকার্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায়) গুগল ওয়ালেটের সঙ্গে যুক্ত করতে পারবেন এবং যেকোনো এনএফসি (নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন)-সাপোর্টেড টার্মিনালে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারবেন। তবে ধাপে ধাপে দেশের অন্যান্য ব্যাংকও এই সেবায় যুক্ত হবে।

সিটি ব্যাংক ও গুগল একসাথে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিয়েছে। চালু হলে ব্যবহারকারীরা কনট্যাক্টলেস পয়েন্ট অফ সেল (পিওএস) টার্মিনালে সহজেই ‘ট্যাপ অ্যান্ড গো’ পেমেন্ট করতে পারবেন, যা তাদের কেনাকাটাকে করবে আরও দ্রুত, নিরাপদ ও আধুনিক।

ডিজিটাল ওয়ালেট সেবাগুলো সাধারণত স্পর্শকাতর আর্থিক তথ্য ও লেনদেন পরিচালনা করে, তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রের মতে, গুগল ওয়ালেট ব্যবহারকারীর তথ্য সংরক্ষণ করবে না। তাই অ্যাপ চালুর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সরাসরি অনুমোদনের প্রয়োজন নেই।